Job
তথ্য প্রযুক্তি - কম্পিউটার - কম্পিউটারের বিবর্তন ও প্রজন্ম
Please, contribute to add content into কম্পিউটারের বিবর্তন ও প্রজন্ম.
Content

প্রথম প্রজন্ম কম্পিউটার বা First Generation Computer (1946-1959)

পঞ্চাশ দশকের কম্পিউটারকেই প্রথম প্রজনাের কম্পিউটার হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। বায়ুশূন্য টিউব দ্বারা এ সময়ের কম্পিউটার তৈরি হতাে। হাজার হাজার ডায়ােড ভালভ, রেজিস্টার, ক্যাপাসিটর ইত্যাদি দিয়ে তৈরি হতাে বলে এরা আকারে অনেক বড় ছিল এবং টিউব। ব্যবহারের জন্য বিদ্যুৎ খরচও পড়তাে অনেক বেশি।

বৈশিষ্ট্য :

১. ভ্যাকুয়াম টিউববিশিষ্ট ইলেকট্রনিক বর্তনীর বহুল ব্যবহার

২. চুম্বকীয় ড্রাম মেমােরির ব্যবহার

৩.মেশিন ভাষার মাধ্যমে নির্দেশ প্রদান ও প্রোগ্রামে অর্থসূচক নির্দেশ সংকেত বা কোড-এর ব্যবহার।

৪.ডেটা সংরক্ষণের জন্য ইলেক্ট্রোস্ট্যাটিক টিউব অথবা মার্কারি ডিলে লাইন-এর ব্যবহার এবং সীমিত ডেটা ধারণক্ষমতা।

৫.ইনপুট/আউটপুট ব্যবস্থার জন্য পাঞ্চকার্ডের ব্যবহার।

৬.বিশাল আকৃতির ও সহজে বহন অযােগ্য

৭.কম নির্ভরশীলতা ও স্বল্পগতি সম্পন্ন

৮.অত্যধিক বিদ্যুৎ শক্তির খরচ ও

৯.রক্ষণাবেক্ষণ ও উত্তাপ সমস্যা।

উদাহরণ: UNIVACI, IBM 650, IBM 704, IBM 709, Mark II, Mark III ইত্যাদি।

Content updated By

দ্বিতীয় প্রজন্ম কম্পিউটার বা Second Generation Computer (১৯৫৯-১৯৬৫)

১৯৫৯ সাল থেকে কম্পিউটারে ভালভের পরিবর্তে ট্রানজিস্টর ব্যবহৃত হতে শুরু করে। ১৯৪৭ সালে আমেরিকার বেল ল্যাবরেটরিতে উইলিয়াম বি শকলে (William B. Shokly), জন বার্ডিন (Jon Berdeen) এবং এইচ ব্রাটেইন (H. Bratain) সম্মিলিতভাবে ট্রানজিস্টর তৈরি করেন। ট্রানজিস্টর আবিস্কৃত হওয়ার পর কম্পিউটার প্রযুক্তির জন্য এক নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মােচিত হয়।

বৈশিষ্ট্য :

১.ট্রানজিস্টরের ব্যবহার।

২.চুম্বকীয় কোর মেমােরির ব্যবহার ও ম্যাগনেটিক ডিস্কের উদ্ভব।

৩.উচ্চ গতিবিশিষ্ট ইনপুট/আউটপুট সরঞ্জাম।

৪.ফরট্রান ও কোবলসহ উচ্চতর ভাষার উদ্ভব।

৫.আকৃতির সংকোচন।

৬.তাপ সমস্যার অবসান

৭.টেলিফোন লাইন ব্যবহার করে ডেটা প্রেরণের ব্যবস্থা

৮.গতি ও নির্ভরযােগ্যতার উন্নতি।।

এ প্রজন্মের একটি কম্পিউটার IBM 1620 দিয়ে ১৯৬৪ সালে বাংলাদেশে কম্পিউটার ব্যবহারের সূচনা হয়। এ কম্পিউটারটি ঢাকার পরমাণু শক্তি কেন্দ্রে সুদীর্ঘ কয়েক বছর চালু ছিল । উদাহরণ: Honeywell 200, IBM 1620, IBM 1400,CDC 1604, RCA 301, RCA 501, NCR 300 GE 200, IBM 1600 ইত্যাদি।

তৃতীয় প্রজন্ম কম্পিউটার বা Third Generation Computer (১৯৬৫-১৯৭১)

তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারে ইনটিগ্রেটেড সার্কিট বা সমন্বিত চিপ (Integrated Circuit বা IC) থাকে যাতে অনেক অর্ধপরিবাহী ডায়ােড, ট্রানজিস্টর এবং অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রাংশ থাকে। এর ফলশ্রুতিতে কম্পিউটারের আকার আরাে ছােট হয়ে আসে, দাম কমে যায়, বিদ্যুৎ খরচ কমে যায়; কাজের গতি ও নির্ভরশীলতা বহুগুণে বেড়ে যায় ।

বৈশিষ্ট্য :

১.একীভূত বর্তনী বা ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটের (IC) ব্যাপক প্রচলন।

২.অর্ধপরিবাহী মেমােরির উদ্ভব ও বিকাশ

৩.আকৃতির সংকোচন

৪.উন্নত কার্যকারিতা ও নির্ভরযােগ্যতা

৫.মিনি কম্পিউটারের প্রচলন

৬.উচ্চতর ভাষার বহুল প্রচলন।

৭.ভিডিও মনিটর ও লাইন প্রিন্টারের প্রচলন এবং নির্বাহী পদ্ধতির উন্নয়ন।

উদাহারণ: IBM 360, IBM 370, PDP-8, PDP-11, GE 600 ইত্যাদি।

চতুর্থ প্রজন্ম কম্পিউটার বা Fourth Generation Computer (১৯৭১-বর্তমান কাল)

বর্তমানে আমরা যে সকল কম্পিউটার ব্যবহার করছি এ সকল কম্পিউটারই চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটার হিসেবে পরিচিত। এ সময় থেকে কম্পিউটারে অর্ধ পরিবাহী মেমােরি প্রবর্তিত হয় এবং LSI (Large Scale Integration) ও VLSI (Very large Scale Integration) প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি মাইক্রোপ্রসেসর (Microprocessor) ব্যবহার হয়। ফলে কম্পিউটারের আকার ও দাম আরাে কমে যায় এবং কাজ করার ক্ষমতা কয়েকগুণ বেড়ে যায় ।

বৈশিষ্ট্য :

১. বৃহদাকার একীভূত বর্তনী (VLSI)

২. মাইক্রোপ্রসেসর (Microprocessor) ও মাইক্রোকম্পিউটার (বা পার্সোনাল কম্পিউটার) এর প্রসার ও প্রচলন।

৩. বর্ধিত ডেটা ধারণক্ষমতা

৪. নির্ভরযােগ্যতার উন্নতি

৫. সরাসরি প্রয়ােগের জন্য প্রােগ্রাম প্যাকেজের ব্যাপক প্রচলন।

উদাহরণIBM 3033, HP 3000, IBM 4341, TRS 80, Sharp PC-1211,IBM PC ইত্যাদি।

পঞ্চম প্রজন্ম কম্পিউটার (Fifth Generation Computer) (ভবিষ্যৎ প্রজন্ম)

ব্যবহারিক ক্ষেত্রে এখনাে চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটার প্রচলিত আছে। আমেরিকা ও জাপান পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটার চালুর অব্যাহত প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। Super VLSI (Very Large Scale Integratiion) চিপ ও অপটিক্যাল ফাইবারের সমন্বয়ে পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটারের অবতারণা করা হয়েছে। এটি অত্যন্ত শক্তিশালী মাইক্রোপ্রসেসর ও প্রচুর ডেটা ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটার। এ কম্পিউটারের বিশেষত্ব হলাে প্রতি সেকেন্ডে ১০০ থেকে ১৫০ কোটি লজিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। মানুষের কণ্ঠস্বর শনাক্ত করার ক্ষমতা ও কণ্ঠে দেয়া নির্দেশ বুঝতে পেরে কাজ করতে পারবে এ কম্পিউটার।

বৈশিষ্ট্য :

১. বহু মাইক্রোপ্রসেসরবিশিষ্ট একীভূত বর্তনী সম্বলিত।

২. কৃত্রিম বুদ্ধির ব্যবহার।

৩. কম্পিউটার বর্তনীতে অপটিক্যাল ফাইবারের (Optical Fiber) ব্যবহার।

৪. প্রােগ্রাম সামগ্রীর উন্নতি।।

৫. স্বয়ংক্রিয় অনুবাদ, শ্রবণযােগ্য শব্দ দিয়ে কম্পিউটারের সাথে সংযােগ ।

৬. চৌম্বক বাবল মেমােরি।।

৭. ডেটা ধারণ ক্ষমতার ব্যাপক উন্নতি

৮. অধিক সমৃদ্ধশালী মাইক্রোপ্রসেসর ও মাইক্রোকম্পিউটার।

৯. বিপুল শক্তিসম্পন্ন সুপার-কম্পিউটারের উন্নয়ন ইত্যাদি।